তীব্র সংকটে ডলারের বাজার অস্থির হয়ে উঠেছে। ডলার সংকট কাটাতে যেসব উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে তা সবই ভেস্তে যাচ্ছে। বাজারে দাম নিয়ে দেখা দিয়েছে বিশৃঙ্খলা। প্রতিনিয়ত বাড়ছে মুদ্রাটির দাম। ডলারের দামের ওপর পরোক্ষ নিয়ন্ত্রণ কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে বাফেদা ও এবিবি’র ওপর ছেড়ে দেয়ার পর মুদ্রাটির দর নিয়ন্ত্রণহীন হয়ে পড়েছে। ফলে খোলা বাজারে ডলারের দাম রেকর্ড সর্বোচ্চ ১২৮ টাকায় পৌঁছেছে। অনেক ব্যাংক ডলার পাচ্ছে না। আবার কেন্দ্রীয় ব্যাংকের শিথিলতার সুযোগে প্রতিযোগিতা করে ১২৪ টাকা দরেও ডলার কিনেছে অনেক ব্যাংক।
ডলালের বাজার নিয়ন্ত্রণ করা এবং নির্ধারিত দামে ডলার বিক্রিসহ বেশ কিছু সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে বৃহস্পতিবার কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদারের সঙ্গে বৈঠক করেছেন ব্যাংকের প্রধান নির্বাহীদের সংগঠন এসোসিয়েশন অব ব্যাংকার্স বাংলাদেশ (এবিবি) এবং বাংলাদেশ ফরেন এক্সচেঞ্জ ডিলার এসোসিয়েশন (বাফেদা)
বর্তমানে বাংলাদেশ ব্যাংকের পরামর্শে ডলারের দাম নির্ধারণ করছে বাফেদা এবং এবিবি। তবে অনেক ব্যাংক ও এক্সচেঞ্জ হাউজ নির্ধারিত দাম ডলার কেনা-বেচা করছে না। এ পরিস্থিতিতে ডলার বাজার নিয়ন্ত্রণে বাংলাদেশ ব্যাংকের সহায়তা চেয়েছে এবিবি ও বাফেদা।
২১ ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) ও প্রধান নির্বাহীরা বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন। বৈঠক শেষে এবিবি’র চেয়ারম্যান ও ব্র্যাক ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) সেলিম আর এফ হোসেন বলেন, এবিবি ও বাফেদার সমন্বয়ে ৮ই নভেম্বর ডলার কেনাবেচার একটা রেট বেঁধে দেয়া হয়েছিল, সেই রেট অনুযায়ী প্রবাসী আয়ের ডলারে ১১৬ টাকার বেশি দিতে পারবে না। তবে আমদানিকারকদের কাছে ব্যাংকগুলোকে ১১১ টাকায় বিক্রি করতে হবে। এর বেশি নেয়া যাবে না। কেউ যদি এটা অমান্য করে তাহলে নিয়ন্ত্রক সংস্থা তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে। তিনি বলেন, ডলারের বাজার খুবই কঠিন পরিস্থিতির মধ্যদিয়ে যাচ্ছে। স্থিতিশীল করার জন্য আমরা সব স্টেকহোল্ডারদের সঙ্গে কাজ করছি।
এদিকে কেন্দ্রীয় ব্যাংক রেমিট্যান্সের ডলার কেনার ক্ষেত্রে কিছুটা নমনীয় হওয়ার পর বাজারে বড় ধরনের অস্থিরতা দেখা দিয়েছে। রেমিট্যান্সের ডলার কেনার ক্ষেত্রে কোনো নিয়মনীতি মানা হচ্ছে না। প্রণোদনার নামে রেমিট্যান্সের ডলার ১২১ থেকে ১২৩ টাকা দরেও কিনছে কোনো কোনো ব্যাংক। বেশির ভাগই কিনছে ১১৪ থেকে ১১৬ টাকা করে। এতে ডলারে কেনার খরচ বেড়ে যাওয়ায় আমদানিতেও প্রিমিয়াম এবং নানা ফির নামে বেশি দামে ডলার বিক্রি হচ্ছে। আমদানির ডলার ১১১ টাকা করে বিক্রির কথা থাকলেও বাজারে বিক্রি হচ্ছে ১১৪ থেকে ১১৭ টাকা। কোনো কোনো ক্ষেত্রে আরও বেশি। এতে রপ্তানিকারকরাও আপত্তি করেছেন। তারা ১১০ টাকা ৫০ পয়সা দরে এখন ডলার বিক্রি করতে চাচ্ছেন না।