দীর্ঘ সময় কারাভোগের পর মুক্তি পেলেন একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন মানবতাবিরোধী অপরাধে অভিযুক্ত জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নেতা এ টি এম আজহারুল ইসলাম। বুধবার (২৭ মে) সকালে ৯টা ২৫ মিনিটে তিনি ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের প্রিজন সেল থেকে মুক্তি পান। এ সময় জামায়াতের শীর্ষ নেতৃবৃন্দ ফুল দিয়ে তাকে শুভেচ্ছা জানান।
কারামুক্তির পরপরই তিনি রাজধানীর শাহবাগে আয়োজিত একটি সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে অংশ নেন। সেখানে উপস্থিত ছিলেন দলের আমির ডা. শফিকুর রহমানসহ কেন্দ্রীয় নেতারা।
সংবর্ধনা মঞ্চে আবেগপ্রবণ কণ্ঠে আজহারুল ইসলাম বলেন, “প্রায় ১৪ বছর পর আমি মুক্ত হলাম। এখন আমি স্বাধীন, একজন স্বাধীন দেশের নাগরিক। ইনশাআল্লাহ, আল্লাহ যদি তৌফিক দেন, আমি আপনাদের সঙ্গেই থাকব।”
উল্লেখ্য, গতকাল মঙ্গলবার (২৬ মে) সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ এক ঐতিহাসিক রায়ে মুক্তিযুদ্ধকালীন ছয়টি মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগ থেকে আজহারুল ইসলামকে খালাস দেন। এসব ঘটনায় ২০১৪ সালে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল তাকে মৃত্যুদণ্ডসহ বিভিন্ন মেয়াদের সাজা দিয়েছিল।
প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বে সাত সদস্যের আপিল বেঞ্চ সর্বসম্মতিক্রমে এ রায় ঘোষণা করেন। দীর্ঘ ছয় বছরের ব্যবধানে দ্বিতীয়বার শুনানির পর এই রায় দেওয়া হয়। এই প্রথমবার, মানবতাবিরোধী অপরাধে রিভিউ আবেদনের প্রেক্ষিতে সুপ্রিম কোর্ট কাউকে খালাস দিলেন।
এর আগে, ২০১৯ সালে আজহারুল ইসলামের মৃত্যুদণ্ড বহাল রেখেছিল তৎকালীন আপিল বিভাগ। তবে সরকার পরিবর্তনের পর ২০২৪ সালের আগস্টে তিনি দ্বিতীয় দফায় আপিল করেন, যার ভিত্তিতে মঙ্গলবারের রায় ঘোষণা করা হয়।
রায় ঘোষণার পরপরই বিচারপতিদের স্বাক্ষর শেষে সংক্ষিপ্ত রায় প্রকাশ করা হয় এবং আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল থেকে আনুষ্ঠানিক মুক্তির আদেশ জারি হয়।