জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার আইনুল ইসলাম বলেন, ছাত্রী ফাইরুজ সাদাফ অবন্তিকার ‘আত্মহত্যার’ ঘটনায় পরিবার মামলা করে তাহলে ব্যবস্থা নেবে পুলিশ।
তিনি বলেন, “গ্রেপ্তারের নির্দেশ বিশ্ববিদ্যালয় আইনে নেই। গ্রেপ্তারটা হলো আইনের বিষয়। তার পরিবার থেকে যদি মামলা করে তাহলে পুলিশ মামলা সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেবে। “প্রেস রিলিজে এটা দেওয়া ঠিক হয়নি। গতকাল রাতে আইন সংস্থার লোকজন ছিল, তাদের হয়ত বলেছে। এর বেশি কিছু নয়।”
বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ ও তথ্য প্রকাশনা বিভাগের উপ পরিচালক মোহাম্মদ ফিরোজ আলম স্বাক্ষিরত বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, “ফাইরুজ অবন্তিকার মৃত্যুর কারণ হিসেবে তার সুইসাইড নোটে দেয়া আইন বিভাগের ২০১৮-২০১৯ শিক্ষাবর্ষের (১৪তম ব্যাচের) অভিযুক্ত শিক্ষার্থী রায়হান সিদ্দিকি আম্মান (আইডি নং-বি ১৮০৫০১০১৬) -কে সাময়িক বহিষ্কার ও দ্রুত গ্রেপ্তারে নির্দেশ এবং অভিযুক্ত শিক্ষার্থীকে সহায়তাকারী ম্যানেজমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের সহকারী অধ্যাপক জনাব দ্বীন ইসলাম-কে সাময়িক বরখাস্ত ও প্রক্টরিয়াল বডি থেকে তাৎক্ষণিক অব্যাহতি প্রদান করে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।”
এছাড়া ঘটনা তদন্তে শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক জাকির হোসেনকে আহ্বায়ক এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন কর্মকর্তা রঞ্জন কুমার দাসকে সদস্য সচিব করে ৫ সদস্যের কমিটি গঠন করার কথাও জানানো হয় বিজ্ঞপ্তিতে। কমিটিকে সাত দিনের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে বলে জানান বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর হোসেন।
এদিকে শনিবার সকালে অবন্তিকার জানাজায় অংশ নিতে বিভাগের সহপাঠীরা তার গ্রামের বাড়ি গেছেন। আর রাতে কুমিল্লায় গেছে প্রক্টরিয়াল বডির একটি দলও।
শুক্রবার রাত দশটার দিকে জগন্নাথের আইন বিভাগের ২০১৭-১৮ বর্ষের ছাত্রী ফাইরুজ সাদাফ অবন্তিকা কুমিল্লায় নিজের বাড়িতে আত্মহত্যা করেন।
আত্মহত্যার আগে সহপাঠী শিক্ষার্থী আম্মান সিদ্দিকের ও বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টর দ্বীন ইসলামের দায়ী করে ফেইসবুকে অবন্তিকা লিখে যান, “এটা সুইসাইড না এটা মার্ডার। টেকনিক্যালি মার্ডার।” আম্মানের বিরুদ্ধে যৌন নিপীড়নমূলক কমেন্ট করার অভিযোগ আনেন অবন্তিকা; আর সহকারী প্রক্টর দ্বীন ইসলামের বিরুদ্ধে আম্মানকে সহায়তা করার অভিযোগ ছিল।
শুক্রবার রাতে কুমিল্লার কোতোয়ালি মডেল থানার ওসি মোহাম্মদ ফিরোজ হোসেন জানান, “মেয়েটি কুমিল্লা শহরের বাগিচাগাও ফায়ার সার্ভিস সংলগ্ন এলাকায় নিজ বাসায় গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা চেষ্টা করে। পরিবারের লোকজন তাকে কুমিল্লা সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে ডাক্তার মৃত ঘোষণা করেন।”
অবন্তিকার মৃত্যুর পর অভিযোগের আঙুল ওঠা তার সহপাঠী ও শিক্ষককে বিচারের আওতায় আনার দাবিতে ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ মিছিল করেন শিক্ষার্থীরা। শুক্রবার রাত ১টায় উপাচার্য সাদেকা হালিম ক্যাম্পাসে গেলে তাকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকে আটকে দেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা।