ঢাকা | |
সংবাদ শিরোনাম :

ভারতের সঙ্গে দেশবিরোধী চুক্তি বাতিল করবে বিএনপি

সম্প্রতি শেখ হাসিনার ভারত সফরে ভারতের সঙ্গে ২টি চুক্তি ৫টি নতুন সমঝোতা স্বারক ও ৩টি চুক্তি নবায়নসহ ১০টি
  • আপলোড সময় : ২৬ জুন ২০২৪, দুপুর ১১:১৬ সময়
  • আপডেট সময় : ২৬ জুন ২০২৪, দুপুর ১১:১৬ সময়
ভারতের সঙ্গে দেশবিরোধী চুক্তি বাতিল করবে বিএনপি ছবি : সংগৃহীত
সম্প্রতি শেখ হাসিনার ভারত সফরে ভারতের সঙ্গে ২টি চুক্তি ৫টি নতুন সমঝোতা স্বারক ও ৩টি চুক্তি নবায়নসহ ১০টি চুক্তি সমঝোতা স্বারক স্বাক্ষর হওয়ায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করছে দেশের অন্যতম রাজনৈতিক দল বিএনপি। তাঁরা বলছে, আওয়ামী লীগ বাংলাদেশকে ভারতের উপর নির্ভরশীল করে ফেলছে। ভবিষ্যতে বিএনপি ক্ষমতায় গেলে ভারতের সঙ্গে হওয়া সকল দেশবিরোধী চুক্তি বাতিল করা হবে। 

দলটির নীতি নির্ধারণী ফোরাম স্থায়ী কমিটি ও শীর্ষ নেতারা বলছেন, বাংলাদেশের সংবিধানের ১৪৫ অনুচ্ছেদে বলা আছে ভিন্ন রাষ্ট্রের সাথে কোনো চুক্তি হলে তা সংসদে তুলে ধরতে হবে কিন্তু আওয়ামি লীগ কখনো তা করেনি। জনগণের সম্মতি ছাড়া একটি স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্রের উপর দিয়ে অন্য একটি দেশের ট্রেন চলাচলের চুক্তিকে সার্বভৌমত্ব বিরোধী চক্রান্ত ও ষড়যন্ত্র হিসেবে মনে করা হচ্ছে। বাংলাদেশের সম্পদ ভারতের হাতে তুলে দেওয়া এ দেশের মানুষ তা কখনোই মেনে নেবে না। 

বিএনপি বলছে, দেশের স্বার্থ জলাঞ্জলি দিয়ে ভারতের সাথে চুক্তি করেছে। স্বাধীনতা পরবর্তী সময় থেকে ভারত বাংলাদেশ যত চুক্তি হয়েছে কোনটাই ভারত বাস্তবায়ন করেনি। ভারতের সাথে স্যাটেলাইট চুক্তির মাধ্যমে জননিরাপত্তা বিঘ্নিত হবার আশংকা করা হচ্ছে। ভারতকে ট্রানজিট দেয়া ও ট্রেন চলাচলের সুবিধা দিয়ে বাংলাদেশের মানুষের কী লাভ বা স্বার্থ তা পরিস্কার করতে হবে সরকারকে  নদীর পানি প্রবাহের আন্তর্জাতিক আইন কখনোই ভারত মানেনি , নদীর পানির ন্যায্য হিস্যা এ দেশের মানুষের অধিকার। এ অধিকার থেকে বঞ্চিত করা হলে বাংলাদেশের ১৮ কোটি মানুষ ভারতের বিরুদ্ধে ক্ষুব্ধ হবে বলেও দলটির ভাষ্য।  

যা বলছে বিএনপির স্থায়ী কমিটি: লিখিত বক্তব্যে বিএনপির স্থায়ী কমিটি মনে করে, তিস্তাসহ অভিন্ন নদী গুলির পানি বন্টনের কোন চুক্তি না করা, সীমান্তে বিএসএফ কর্তৃক বাংলাদেশী নাগরিকদের হত্যা বন্ধ না করা, একতরফা ভাবে ভারতকে সকল সুবিধা প্রদান করে বাংলাদেশের স্বার্থ ব্যাপকভাবে ক্ষুন্ন হয়েছ। কানেকটিভিটির নামে বাংলাদেশের অভ্যন্তরে ভারতের একপ্রান্ত থেকে আরেক প্রান্ত পর্যন্ত রেল যোগাযোগ, ডাক ও টেলিযোগাযোগের সমঝোতা, কৌশলগত ও অপারেশনাল খাতে সামরিক শিক্ষা সহযোগীতা, ঔষধ সংক্রান্ত সমঝোতা, বাংলাদেশের জলসীমায় ভারতের অবাধ বিচরণ এবং ভারতের ইনস্পেস ও বাংলাদেশের ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের সমঝোতা, রেলমন্ত্রণালয়ের মধ্যে সমঝোতা, সমুদ্র বিষয়ক গবেষণায় দুই দেশের সমঝোতা ইত্যাদি সমঝোতাগুলোতে বাংলাদেশের স্বার্থ ক্ষুন্ন হয়েছে। ভারতকে সকল প্রকার সুবিধা প্রদানের বিনিময়ে ভারতের কাছে থেকে বাংলাদেশের কোন স্বার্থ আদায় করতে শেখ হাসিনা সম্পূর্ণ ব্যর্থ হয়েছেন এবং এটা ম্যান্ডেট বিহীন অবৈধ সরকারের নতজানু পররাষ্ট্রনীতি বহিঃপ্রকাশ। সভায়, এই চুক্তিগুলিকে বাংলাদেশের স্বার্থ বিরোধী হওয়ায় বিএনপি এই চুক্তিগুলি প্রত্যাক্ষাণ করছে। 

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফরে সফলতা নেই। এই অবৈধ সরকার পরিকল্পিতভাবে বাংলাদেশকে ভারতের উপর নির্ভরশীল করে ফেলছে। আমাদের যে সমস্যাগুলো, আমরা তিস্তা নদীর পানির যে ন্যায্য হিস্যা পাচ্ছি না- সেই ব্যাপারে কোনো চুক্তি হয়নি। উপরন্তু কি হয়েছে? তিস্তা প্রকল্পের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। সেই প্রকল্পে অংশগ্রহণ করার জন্য, তাতে বিনিয়োগ করার জন্য ভারতবর্ষ প্রস্তাব করেছে। তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের প্রশ্ন খুব পরিস্কার। আমরা সবার আগে তিস্তার পানির ন্যায্য বন্টন চাই এবং যে সমস্ত অভিন্ন নদী আছে, এর প্রত্যেকটির ন্যায্য হিস্যা চাই। এটা আমাদের অধিকার, আন্তর্জাতিক আইনের অধিকার। এই কথাগুলো সরকার বলতে সম্পূর্ণ ব্যর্থ হচ্ছে।’সরকারের কঠোর সমালোচনা করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘আজকে ভারতের কাছে তারা (সরকার) সেবাদাসে পরিণত হয়ে গেছে। শুধু ভারত নয়, আশপাশের প্রতিবেশী দেশগুলোর কাছে তারা পুরোপুরি মাথা নিচু করে নতজানু পররাষ্ট্রনীতি অনুসরণ করছে। মিয়ানমার থেকে গুলি আসে, জবাবটাও পর্যন্ত তারা দিতে পারে না। একটা নতজানু শাসকগোষ্ঠী আমাদের ওপরে চেপে বসে আছে।’

বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আসাদুজ্জামান রিপন ডেইলি মেসেঞ্জারকে বলেন, এই সফরে বাংলাদেশের কোনো স্বার্থ রক্ষা হয়নি। বরং প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফরের মাধ্যমে বাংলাদেশ আরেক দফায় চুড়ান্ত সর্বনাশে পা দিয়েছে। সংবিধানের ১৪৫ অনুচ্ছেদও অনুসরণ করেনি। 

আবারও গঙ্গা চুক্তি নবায়ন হয়েছে, এতে আমাদের কী লাভ আমরা কী কখনো পানি পেয়েছি। যতগুলো চুক্তি স্বাক্ষর হয়েছে সবই দেশের বিরুদ্ধে গিয়েছে। এটা হলো প্রধানমন্ত্রীর অবৈধভাবে ক্ষমতা থাকার খেসারত। ক্ষমতায় থাকতে গেলে শেখ হাসিনাকে ভারতের স্বার্থে দেশের স্বার্থের বিরুদ্ধে গিয়ে এগুলো দিতে হবে। বাংলাদেশের বুকের উপর দিয়ে রেললাইন চলবে অথচ এখানে আমাদের কোনো ভাগ থাকবে না তা এ দেশের মানুষ কখনোই মেনে নেবে না। আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় থাকাকালীন যতগুলো দেশ বিরোধী চুক্তি করেছে বিএনপি ক্ষমতায় গেলে সব চুক্তি বাতিল করা হবে। এ পর্যন্ত কী কী দেশবিরোধী চুক্তি রয়েছে তা বিএনপির দৃষ্টিতে রয়েছে। এদেশের মানুষকে নিয়ে আওয়ামী সরকারের দেশ বিরোধী সব চুক্তি আজ হোক কাল হোক অবশ্যই বাতিল হবে। শেখ হাসিনা অবৈধভাবে ক্ষমতায় থেকে বাংলাদেশের সম্পদ ভারতের হাতে তুলে দিচ্ছেন। 

বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান নিতাই রায় চৌধুরী ডেইলি মেসেঞ্জারকে বলেছেন, প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফর ফলপ্রসু হয়নি। দেশের অধিকাংশ মানুষ এ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন ক্ষোভ প্রকাশ করছেন। প্রধানন্ত্রী ভারত সফর ছিলো দেশবিরোধী। তিনি সফরে গিয়ে সবার আগে ভারতের স্বার্থ দেখেছেন। বাংলাদেশের কোনো স্বার্থ দেখেননি। এক কথায় বলা চলে শেখ হাসিনা নিজেই অবৈধভাবে ক্ষমতায় এসেছে। এজন্য দেশের কোনো জাতীয় স্বার্থ রক্ষা হবে তা আশা করা যায় না। যে কয়েকটি সমঝোতা স্বারক সই ও নবায়ন হয়েছে তা সম্পূর্ণ আমাদের বাংলাদেশের স্বার্থ বিরোধী।
  • বিষয়:

নিউজটি আপডেট করেছেন: বাংলা নিউজ নেটওয়ার্ক ডেস্ক।

বাংলা নিউজ নেটওয়ার্ক ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
কমেন্ট বক্স
সর্বশেষ সংবাদ
উচ্চগতি ইন্টারনেট সেবাদাতা স্টারলিংকের আজ থেকে যাত্রা শুরু

উচ্চগতি ইন্টারনেট সেবাদাতা স্টারলিংকের আজ থেকে যাত্রা শুরু