কাশ্মীরের পেহেলগামে পর্যটকদের ওপর সন্ত্রাসী হামলার পরিপ্রেক্ষিতে সীমান্তে আবারও চরম উত্তেজনা দেখা দিয়েছে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে। এরই ধারাবাহিকতায় বুধবার ভোররাতে পাকিস্তানের বিভিন্ন স্থানে সমন্বিত ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে ভারত। ভারতীয় নিরাপত্তা সূত্র বলছে, স্থল, নৌ ও বিমানবাহিনীর সমন্বয়ে এই অভিযানের নাম দেওয়া হয়েছে ‘অপারেশন সিঁদুর’।
ভারতের সেনাবাহিনীর দাবি, এই অভিযানে পাকিস্তানের ভেতরে ও আজাদ কাশ্মীরে অবস্থিত অন্তত ৯টি জঙ্গি ঘাঁটি ধ্বংস করা হয়েছে। এসময় জইশ-ই-মহম্মদ, লস্কর-ই-তইয়্যেবা ও হিজবুল মুজাহিদিনের প্রায় ৮০ থেকে ৯০ জন সদস্য নিহত হয় বলে তারা দাবি করেছে। বড় দুটি হামলা হয়েছে বাহাওয়ালপুর ও মুরিদকেতে, যেখানে জঙ্গিদের একটি আদর্শিক কেন্দ্র 'মসজিদ ও মারকাজ তাইয়্যেবা' লক্ষ্যবস্তু ছিল বলে জানায় ভারতীয় গণমাধ্যম ইন্ডিয়া টুডে।
ভারতীয় পক্ষ জানিয়েছে, এই হামলাগুলো শুধুমাত্র জঙ্গি ঘাঁটির ওপরই পরিচালিত হয়েছে; পাকিস্তানের কোনো সেনাঘাঁটি হামলার লক্ষ্য ছিল না। তবে ভারতের গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর দাবি, পাকিস্তানের সেনাবাহিনী, আইএসআই এবং এসএসজি বাহিনী এসব জঙ্গি ঘাঁটিতে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে সহায়তা করেছে।
অন্যদিকে, পাকিস্তান জানিয়েছে, ভারতীয় হামলায় অন্তত ৮ জন বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছেন, যার মধ্যে একজন শিশু রয়েছে। পাকিস্তান এই হামলাকে সরাসরি যুদ্ধ ঘোষণার শামিল বলে উল্লেখ করেছে। পাল্টা প্রতিক্রিয়ায় তারা সীমান্তে ভারী গোলাবর্ষণ শুরু করেছে এবং তাদের দাবি, তারা পাঁচটি ভারতীয় যুদ্ধবিমান, একটি ড্রোন এবং একটি ব্রিগেড সদর দপ্তর ধ্বংস করেছে।
উভয়পক্ষের গোলাবিনিময়ে ভারতের তিনজন বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছেন বলে জানা গেছে। সীমান্তজুড়ে এখনো গোলাগুলি চলছে।
প্রসঙ্গত, গত ২২ এপ্রিল কাশ্মীরের পেহেলগামে বন্দুকধারীদের হামলায় ২৬ জন পর্যটক নিহত হন। ভারত এ ঘটনার জন্য পাকিস্তানকে দায়ী করলেও পাকিস্তান তা অস্বীকার করে নিরপেক্ষ তদন্তের আহ্বান জানিয়েছে।
বর্তমান পরিস্থিতিতে ভারতের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় দেশটির নাগরিকদের সতর্ক থাকার এবং উত্তর ভারতগামী ভ্রমণ এড়িয়ে চলার পরামর্শ দিয়েছে।