গাজা উপত্যকার ধ্বংসস্তূপ থেকে পুনর্গঠনের জন্য নতুন উদ্যোগ গ্রহণ করেছে আরব দেশগুলো। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের দেওয়া প্রস্তাবের পরিবর্তে একটি বিকল্প পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে তারা। এই পরিকল্পনার মূল লক্ষ্য গাজার পুনর্গঠন নিশ্চিত করা এবং সেখানে বসবাসকারী ফিলিস্তিনিদের স্বাভাবিক জীবনে ফেরানো।
মঙ্গলবার (৫ মার্চ) মিসরের রাজধানী কায়রোতে অনুষ্ঠিত জরুরি আরব সম্মেলনে মিসরের উপস্থাপিত পরিকল্পনাটি সর্বসম্মতভাবে গৃহীত হয়। সম্মেলনে আরব নেতারা গাজার পুনর্গঠনের জন্য ৫ হাজার ৩০০ কোটি ডলারের বাজেট নির্ধারণ করেছেন। তারা একমত হয়েছেন যে, এই পুনর্গঠন প্রক্রিয়ায় গাজার বাসিন্দাদের বাস্তুচ্যুত করার প্রয়োজন হবে না। মিসরের প্রেসিডেন্ট আবদেল ফাত্তাহ আল-সিসি এই সিদ্ধান্তের কথা নিশ্চিত করেছেন।
গাজার ভবিষ্যৎ শাসন ব্যবস্থাকে ঘিরে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন রয়ে গেছে। এই উপত্যকা কে শাসন করবে এবং পুনর্গঠনের জন্য প্রয়োজনীয় অর্থায়ন কোন কোন দেশ থেকে আসবে— এসব বিষয়ে সম্মেলনে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে। মিসরের প্রেসিডেন্ট সিসি জানান, গাজায় প্রশাসন পরিচালনার জন্য স্বতন্ত্র ও পেশাদার টেকনোক্র্যাটদের সমন্বয়ে একটি কমিটি গঠন করা হবে। ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের (পিএ) হাতে দায়িত্ব হস্তান্তরের প্রস্তুতির অংশ হিসেবে এই কমিটি সাময়িক সময়ের জন্য মানবিক সহায়তা তদারকি ও গাজার বিভিন্ন বিষয় দেখভাল করবে।
আল-জাজিরার এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সম্মেলন শেষে মিসরের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বদর আবদেলাত্তি এক সংবাদ সম্মেলনে জানান, ছয় মাসের জন্য গাজার প্রশাসন পরিচালনার জন্য একজন প্রধান মনোনীত করা হয়েছে। তবে তার নাম এখনো প্রকাশ করা হয়নি।
আরব লিগের মহাসচিব আহমেদ আবুল গেইত জানান, গাজার পুনর্গঠনে মিসরের পরিকল্পনাকে পুরোপুরি সমর্থন দিয়েছে আরব দেশগুলো। প্রেসিডেন্ট সিসি আশা প্রকাশ করেছেন, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প এই সংঘাত বন্ধ করে শান্তি প্রতিষ্ঠায় কার্যকর ভূমিকা পালন করবেন।
গাজার পুনর্গঠনে আরব দেশগুলোর এই পরিকল্পনা সেখানে দীর্ঘমেয়াদী স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনতে কতটা সফল হবে, তা এখন সময়ই বলে দেবে। তবে, এই উদ্যোগ নিঃসন্দেহে যুদ্ধবিধ্বস্ত অঞ্চলের জন্য এক বড় আশা হিসেবে দেখা হচ্ছে। তথ্যসূত্র : আল-জাজিরা, বিবিসি, রয়টার্স