২০০৯ সালে তৎকালীন বিডিআর সদর দপ্তর পিলখানায় সংগঠিত হত্যাকাণ্ডের শিকার মেজর তানভীর হায়দার নূরের স্ত্রী তাসনুভা মাহা বলেছেন, রাওয়া’তে (রিটায়ার্ড আর্মড ফোর্সেস অফিসার্স ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন) সেনাপ্রধান যে বক্তব্য দিয়েছেন সেটা আমাদের খুবই অপমানজনক। পিলখানার সৈনিকরা কখনোই এই ঘটনা ঘটাতে পারে না। আমি নিজে সবচেয়ে বড় প্রমাণ।
মঙ্গলবার জাতীয় শহিদ সেনা দিবসের এক অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন তিনি।
তিনি বলেন, আমার রুমে গিয়েছিল হিন্দিভাষীরা। আমার স্বামীর সঙ্গে আমি পিলখানায় সাড়ে তিন বছর ছিলাম। কিন্তু আমি এই সাড়ে তিন বছরে কখনো বিডিআর-এর কোনো সদস্যকে হিন্দিতে কথা বলতে শুনি নাই। শুধুমাত্র ২৫ ফেব্রুয়ারিতে শুনেছিলাম তিনজনের মুখে। আমার হাসব্যান্ড দরবার হল থেকে ফোনে বলেছিল ‘এনএসজি’ এবং ‘ইন্ডিয়ান’। তাহলে এখানে কি প্রমাণ হচ্ছে না কারা ঘটিয়েছিল এই ঘটনা।
তাসনুভা আরও বলেন, ২০০৯ সাল থেকে আমার কোনো বক্তব্য নেওয়া হয়নি। তারপরও আমি যা বলছি সেগুলো মিডিয়াতে কাট করা হয়েছিল। আর স্বামীর ডেডবডি এখনো পাওয়া যায়নি। এটা আমি প্রতিনিয়ত বলে যাচ্ছি। গতকাল আমি দুটি সাক্ষাৎকার দেওয়ার জন্য কবরস্থানে গিয়েছিলাম, কিন্তু আমার সেই বক্তব্য এখনো প্রচার করতে দেওয়া হয়নি ‘আইএসপিআর’থেকে। আপনারা কি বুঝতে পারছেন কোথায় বাঁধাটা।
তিনি আরও বলেন, আমার ছেলেকে ‘আইএসএসবি’থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে। কারণ মেজর তানভিরের সন্তান সশস্ত্রবাহিনীতে চাকরি করতে পারবে না। সেনাবাহিনীতে আরও একটা মেজর তানভীর গড়ে উঠুক সেটা বর্তমান সেনাপ্রধান চান না। আমাদের জীবনটা সম্পূর্ণভাবে শেষ করে দেওয়া হচ্ছে।আমার বাসার নিচে সবসময় লোকজন থাকে। আপনারা কি বুঝতে পারছেন আমরা কোথায় আছি। আজকে রাওয়ার বক্তব্যই এটা প্রমাণ করে দেয়। বাট ইফ ফুলস্টপ এটা কোন ধরনের সেনাপ্রধানের কথা হতে পারে।
পিলখানা হত্যাকাণ্ডের শিকার মেজর তানভীরের স্ত্রী বলেন, ২০০৯ সালের পিলখানা হত্যাকাণ্ডের পর থেকে যতদিন পর্যন্ত শেখ হাসিনা ছিল; এই সময়টায় দেখা গেছে যে, আওয়ামী লীগের লোকজন সেনাবাহিনীতে বসে আছে। শেখ হাসিনাকে তো আমরা বিদায় করেছি। কিন্তু এখন পর্যন্ত আমরা সুবিচারটা পাচ্ছি না। পিলখানা হত্যাকাণ্ডের তদন্ত কী সঠিকভাবে হচ্ছে? আমার তো মনে হয় না। আমি যে হিন্দি ভাষার কথাটা বলছি এটা খুব হালকাভাবে নেওয়া হচ্ছে।
সবশেষে তিনি বলেন, আপনারা আমাদেরকে সহায়তা করেন যাতে আমরা সঠিকভাবে আগাতে পারি। আর আমার স্বামীর ডেডবডিটা এখনও পাওয়া যায়নি। আর্মি থেকেও কিন্তু আমাকে কেউ কোনো সহায়তা করছে না।