৭৮১ কোটি ৩১ লাখ ২২ হাজার ৪৫৪ টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে নাসা গ্রুপের কর্ণধার ও এক্সিম ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম মজুমদারের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। রাজধানীর সেগুনবাগিচায় দুদকের প্রধান কার্যালয়ের মহাপরিচালক মো. আক্তার হোসেন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
নজরুল ইসলাম মজুমদার ব্যাংক মালিকদের সংগঠন বিএবির সাবেক চেয়ারম্যান। মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, নজরুল ইসলাম মজুমদারের নিজ নামে ঢাকার গুলশান অ্যাভিনিউ রোডে ১৪তলা ভবন, তেজগাঁও শিল্প এলাকায় ৩তলা ভবন, নিউ ডিওএইচএসের লেক রোড-১৮-এ দোতলা বাড়ি, একই রোডে আরেকটি ৪তলা বাড়িসহ বিভিন্ন স্থাবর সম্পদ রয়েছে, যার মূল্য ৫৩২ কোটি ৮৭ লাখ। তার নামে এক্সিম ব্যাংকের ৬৭ কোটি ৫২ লাখ টাকা মূল্যের শেয়ার এবং নাসা গ্রুপের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে ৩০ কোটি ৯৮ লাখ টাকা মূল্যের শেয়ার রয়েছে। সব মিলিয়ে নজরুল ইসলাম মজুমদারের অস্থাবর সম্পদের মোট মূল্য ৫৯৯ কোটি ৭৯ লাখ টাকা। স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদ মিলিয়ে নাসা গ্রুপের কর্ণধারের ১ হাজার ১৩২ কোটি ৬৬ লাখ টাকার সম্পদের হিসাব পাওয়া গেছে।
এজাহারে বলা হয়েছে, ২০২৩-২৪ করবর্ষের আয়কর রিটার্ন অনুযায়ী, নজরুল ইসলাম মজুমদারের দায়-দেনা ২৯৯ কোটি ৭৮ লাখ টাকা। দায়-দেনা বাদ দিয়ে তার নিট সম্পদের মূল্য দাঁড়ায় ৮৩২ কোটি ৮৮ লাখ টাকা। ২০০৫-০৬ করবর্ষে তার নিট সম্পদের মূল্য ছিল ১৪ কোটি ৪৫ লাখ টাকা। এ ছাড়া ২০০৫-০৬ করবর্ষ থেকে ২০২৩-২৪ করবর্ষ পর্যন্ত নজরুল ইসলাম মজুমদারের গ্রহণযোগ্য মোট আয় ৪২২ কোটি ১১ লাখ টাকা। এ সময়ের মধ্যে ঋণ পরিশোধ, পারিবারিক খরচসহ তার অন্যান্য ব্যয় ছিল ৩৭০ কোটি ৫৩ লাখ টাকা এবং বৈধ উৎস থেকে সঞ্চয়ের পরিমাণ ছিল ৫১ কোটি ৫৭ লাখ টাকা। এ হিসাব অনুযায়ী, নজরুল ইসলাম মজুমদারের ‘জ্ঞাত আয়ের’ বাইরে অর্জিত সম্পদের মূল্য ৭৮১ কোটি ৩১ লাখ ২২ হাজার ৪৫৪ টাকা, যা তিনি নিজের দখলে রেখে দুর্নীতি দমন কমিশন আইন, ২০০৪-এর ২৭ (১) ধারায় শাস্তিযোগ্য অপরাধ করেছেন বলে মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে।
ক্ষমতার পালাবদলের পর গত বছরের ২ অক্টোবর নজরুল ইসলাম মজুমদারকে রাজধানীর গুলশানে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তার বিরুদ্ধে বেশ কয়েকটি মামলা রয়েছে। ২০০৭ সাল থেকে এক্সিম ব্যাংকটির চেয়ারম্যান পদে ছিলেন। তিনি ২০০৯ সাল থেকে ব্যাংক উদ্যোক্তাদের সংগঠন বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকসের (বিএবি) চেয়ারম্যান পদে ছিলেন।