এখন ঢাকার অভিজাত এলাকায় যেকোনো সময় আপনার চোখে পড়তে পারে বিশ্বের সবচেয়ে অভিজাত গাড়ি রোলস রয়েস। কারণ, বাংলাদেশে এই অভিজাত গাড়ির বাজারজাত শুরু হয়েছে। মাত্র ছয় মাসের ব্যবধানে আটটি রোলস রয়েস গাড়ি এনেছেন দেশের বিভিন্ন শিল্প গ্রুপ ও গাড়ি ব্যবসায়ীরা।
আমদানি হওয়া সব গাড়ি রোলস রয়েসের বৈদ্যুতিক গাড়ি ‘স্পেক্টার’। বাংলাদেশে মোট ১২টি রোলস রয়েস আমদানির তথ্য রয়েছে এনবিআরের হাতে। রোলস রয়েসের তেলচালিত গাড়িগুলো ইঞ্জিনক্ষমতা সাধারণত ছয় হাজার সিসির বেশি হয়। এসব গাড়ি আমদানিতে আমদানি মূল্যের চেয়ে সোয়া আট গুণ বেশি শুল্ক–কর দিতে হয়। বৈদ্যুতিক গাড়িতে শুল্ক–কর কম হওয়ায় গত ছয় মাসে আমদানি হয়েছে আটটি।
১৯১৪ সালে প্রতিষ্ঠিত ব্রিটিশ বিলাসবহুল গাড়ি নির্মাতা প্রতিষ্ঠান রোলস রয়েস গত বছর প্রথমবারের মতো বৈদ্যুতিক গাড়ি বাজারজাত শুরু করে।বাজারজাত শুরুর পর বাংলাদেশ থেকে আটটি গাড়ি কেনার জন্য বুকিং দেওয়া হয়।
একেকটি গাড়ির কেনা দামই পড়েছে চার থেকে সাড়ে চার কোটি টাকা। এর আগে বাংলাদেশে আমদানি হওয়া সবচেয়ে দামি গাড়ি ছিল ‘ফেরারি’।
শুধু টাকা থাকলেই যে গাড়িটি কিনতে পারবে বিষয়টি এমন না, গাড়ি কেনার জন্য অনেকগুলো শর্ত মানতে হতো। এ ছাড়া বিক্রির আগে এ ধরনের গাড়ি রক্ষণাবেক্ষণ ও পরিচর্যার সক্ষমতাও বিবেচনায় নিত ব্রিটিশ কোম্পানিটি। তবে এক–দেড় দশক ধরে রোলস রয়েস গাড়ি বিক্রির সময় এসব শর্ত দিচ্ছে না। তাতে এখন যে কেউ টাকা থাকলে রোলস রয়েস গাড়ি কিনতে পারে। তবে বাংলাদেশে রোলস রয়েসের সবচেয়ে কম দামি কুলিনান ব্র্যান্ডের গাড়িতে শুল্ক–কর আসে অন্তত ২৫–৩৯ কোটি টাকা। বৈদ্যুতিক গাড়িতে শুল্ক–কর অনেক কম। এই সুযোগে রোলস রয়েস গাড়ি আমদানি বাড়ছে।
রোলস রয়েসের বৈদ্যুতিক মডেলের সর্বশেষ গাড়িটি গত ১৪ অক্টোবর চট্টগ্রাম বন্দর থেকে খালাস করেছে ঢাকার ভাটারা এলাকার ফোর হুইলস মোটরস। এই বৈদ্যুতিক গাড়ির আমদানিমূল্য ছিল ২ লাখ ৭০ হাজার পাউন্ড। চট্টগ্রাম কাস্টমস গাড়িটির আমদানি মূল্য ৪ কোটি ৬৪ লাখ টাকা ধরে শুল্কায়ন করেছে। বৈদ্যুতিক গাড়ি হওয়ায় শুল্ক–করের হার ছিল ৮৯ দশমিক ৩২ শতাংশ। তাতে শুল্ক–কর দিতে হয়েছে ৪ কোটি ১৪ লাখ টাকা। এ হিসাবে রোলস রয়েস ব্র্যান্ডের গাড়িটি আমদানিতে সব মিলিয়ে খরচ পড়েছে ৮ কোটি ৭৮ লাখ টাকা। তবে বৈদ্যুতিক গাড়ি না হলে এই গাড়ির (চার হাজার সিসির বেশি ধরে) শুল্ক–কর দিতে হতো ৮২৬ দশমিক ৬০ শতাংশ বা ৩৮ কোটি ৩৫ লাখ টাকা।