দীর্ঘ ২৩ দিন পর খুলেছে গাজীপুর মহানগরীর মোগরখাল এলাকার টিএনজেড গ্রুপের পাঁচটি কারখানা। আজ শনিবার (১৬ নভেম্বর) সকাল থেকেই কাজে যোগদান করেছেন পোশাক শ্রমিকরা।
এর আগে নির্ধারিত সময়ের তিন দিন আগেই অর্থাৎ গত বৃহস্পতিবার টিএনজেড গ্রুপের পাঁচটি কারখানার ৩ হাজার ৬২০ জন শ্রমিক ও ১২০ জন স্টাফের এক মাসের বকেয়া পরিশোধ করেছেন কারখানা কর্তৃপক্ষ।
কারখানা কর্তৃপক্ষ ও শ্রমিকরা জানান, গত বৃহস্পতিবার বেতন পরিশোধের পর কারখানার সামনে নোটিশ টানিয়ে দেওয়া হয়-আজ শনিবার থেকে কারখানা খোলা থাকবে। সেই নির্দেশনা অনুযায়ী শ্রমিকরা যথারীতি আজ সকাল থেকে কাজে যোগদান করেছেন।
টিএনজেড অ্যাপারেলস গ্রুপের চেয়ারম্যান মো. হেদায়তুল হক, গত বৃহস্পতিবার শ্রমিকদের বকেয়া বেতন পরিশোধ করা হয়েছে। এছাড়া আরও কিছু বকেয়া রয়েছে যেগুলি চলতি মাসের ৩০ তারিখের মধ্যেই পরিশোধ করা হবে। শনিবার সকাল থেকে শ্রমিকরা শান্তিপূর্ণভাবে কাজে যোগদান করেছেন। আমি আশা করছি আর কোনো সমস্যা হবে না। কারখানার এই শ্রমিক সংকট সমাধান করার জন্য আমি শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সচিবসহ সকলের কাছে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, টিএনজেড গ্রুপের গাজীপুর সিটি করপোরেশনের মোগরখাল এলাকায় পাঁচটি কারখানা রয়েছে। এসব কারখানার মধ্যে টিএনজেড অ্যাপারেলস লিমিটেডে শ্রমিকের সংখ্যা দুই হাজার ৮০০, বেসিক ক্লথিং লিমিটেডে ৪২০ এবং অ্যাপারেলস আর্ট লিমিটেডে ৪০০ শ্রমিক রয়েছেন। তাদের সেপ্টেম্বর এবং অক্টোবর মাসের বেতন বকেয়া ছিল। এছাড়া এক্সপো কার্টনে ৪০ জন এবং এমএনএস ইয়ার্ন ডায়িং কারখানায় ৮০ জন স্টাফ রয়েছেন। তাদের গত দুই মাসের বেতন ও সার্ভিস বেনিফিট বকেয়া ছিল।
প্রসঙ্গত, গত ৯ নভেম্বর সকাল সাড়ে ৯টা থেকে টিএনজেড গ্রুপের পাঁচটি কারখানার প্রায় ২ হাজার শ্রমিক দুই মাসের বকেয়া বেতনের দাবিতে গাজীপুর সিটি করপোরেশনের মালেকের বাড়ি এলাকায় ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ শুরু করেন। এতে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক ও ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কে ভয়াবহ যানজট ছড়িয়ে পড়ে। সাধারণ মানুষ দুর্ভোগে পড়েন এবং পণ্য পরিবহন বাধাগ্রস্ত হয়। টানা তিন দিনের বিক্ষোভের পর শ্রম মন্ত্রণালয়ের সচিব এএইচএম শফিকুজ্জামান ঘোষণা দেন যে, শ্রমিকদের বেতন পরিশোধে উদ্যোগ নেবে সরকার। গত সোমবার রাতে শ্রম ভবনে অনুষ্ঠিত বৈঠকে টিএনজেড গ্রুপের ৩১ শ্রমিক প্রতিনিধি, বিজিএমইএ এবং শ্রম মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতে সমঝোতা চুক্তি সই হয়। এতে সিদ্ধান্ত হয়, ১৭ নভেম্বরের মধ্যে শ্রমিকদের সেপ্টেম্বর মাসের এবং ৩০ নভেম্বর অক্টোবর মাসের বকেয়া বেতন পরিশোধ করা হবে। গ্রুপের কারখানাগুলো কর্তৃপক্ষ দ্রুত খুলে দেবে।
এছাড়া ৩০ নভেম্বরের আগে কেউ যদি আবার সড়ক অবরোধ করেন, তাহলে টাকা পরিশোধ করা হবে না। পরে শ্রমিকেরা অবরোধ প্রত্যাহারের ঘোষণা দিলে সোমবার (১১ নভেম্বর) রাত ১০টার পর থেকে ওই সড়কে যান চলাচল শুরু হয়।