চকরিয়া পূর্ব বড় ভেওলা ইউনিয়ন পরিষদের ৭নং ওয়ার্ডের দায়িত্বপ্রাপ্ত গ্রাম পুলিশ মঙ্গল চন্দ্র সরকারি বরাদ্দ লুটপাট ও গ্রামের অসহায় নারীদের ঘরে ঢুকে অসামাজিক কার্যকলাপে জড়িত দাবি করে ফুঁসে উঠেছে স্থানীয়রা। ইতোমধ্যে নারী কেলেঙ্কারির ঘটনায় বাঁধা দিতে গিয়ে তাঁর হাতে মারধরের শিকার হয়েছে স্থানীয় ঘাইট্টারচর জলদাশপাড়া গ্রামের বিপ্লব জলদাশ ও সোনাইয়া জলদাশ নামের দুই যুবক।
এ ঘটনায় শুক্রবার (২৬ অক্টোবর) বিক্ষুব্ধ এলাকাবাসী মিছিল সহকারে চকরিয়া থানায় গিয়ে মঙ্গল চৌকিদারের বিরুদ্ধে একটি এজাহার জমা দিয়েছেন।
শনিবার (২৭ অক্টোবর) বিকাল ৫টার দিকে পুর্ববড় ভেওলা ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ড ঘাইট্টারচর জলদাশপাড়া এলাকায় স্থানীয় বিক্ষুব্ধ বিপুল নারী পুরুষ ইউনিয়ন পরিষদের দায়িত্ব থেকে অভিযুক্ত মঙ্গল গ্রাম পুলিশকে অপসারণের দাবিতে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ করেছেন।
মানববন্ধনে বিক্ষুব্ধ জলদাশ সম্প্রদায়ের নারী পুরুষ অভিযোগ করে বলেন, ইউনিয়ন পরিষদের গ্রাম পুলিশে চাকুরী করার দাপট দেখিয়ে মঙ্গল চন্দ্র দীর্ঘদিন ধরে এলাকাবাসীকে নানাভাবে হয়রানি করে আসছে, এলাকায় কোন একটি ঘটনা হলে আগে তাকে তাঁকে চাঁদা দিতে হয়।
ইউনিয়ন পরিষদ থেকে জলদাশপাড়ার কেউ জন্ম নিবন্ধন সনদ বা নাগরিক সনদ নিতে গেলে মেম্বার চেয়ারম্যানের আগে তাঁর সঙ্গে বুঝাপড়া করতে হয়। মোট কথা গ্রাম পুলিশ মঙ্গল চন্দ্রকে টাকা না দিলে পুর্ববড় ভেওলা ইউনিয়ন পরিষদের কোন সেবা ঘাইট্টারচর জলদাশপাড়া গ্রামের মানুষ পান না।
সাগরে মাছ আহরণ কাজে নিয়োজিত কয়েকজন জেলে মানববন্ধনে দাবি করেন, পুর্ববড় ভেওলা ইউনিয়ন পরিষদে ৭ নম্বর ওয়ার্ড ঘাইট্টারচর জলদাশপাড়া গ্রামের জেলে পরিবারের তালিকা সংরক্ষিত রয়েছে। সাগরে মাছ আহরণ বন্ধ সময়ে সরকারিভাবে জেলে পরিবারের জন্য চাউল বরাদ্দ দেওয়া হলেও অভিযুক্ত গ্রাম পুলিশ মঙ্গল চন্দ্র অনিয়মের আশ্রয় নিয়ে কৌশলে অনেকের বরাদ্দের চাউল আত্মসাৎ করেছে।
আবার বরাদ্দ কম এসেছে, এমন অজুহাত দেখিয়ে বরাদ্দ পাওয়া ১৫/২০ পরিবারের চাউল তাঁর আত্মীয় স্বজনের কাছে বিতরণ করেন। এভাবে দীর্ঘ সময় থেকে মঙ্গল চৌকিদার পরিষদ থেকে সরকারিভাবে বরাদ্দ বিভিন্ন সুযোগ সুবিধা নিজে লুটে নিয়েছে বলে অভিযোগ তুলেছেন ভুক্তভোগী এলাকাবাসী।
এলাকাবাসী জানান, গ্রাম পুলিশ মঙ্গল চন্দ্র দীর্ঘদিন ধরে নারী কেলেঙ্কারিতে জড়িত। অতিসম্প্রতি রাতের আঁধারে এক নারীর ঘরে ঢুকে অনৈতিক কর্মকান্ডে লিপ্ত হয়ে গেলে এলাকার কয়েকজন যুবক ঘটনাটি আঁচ করতে পেরে তাঁকে বাঁধা দেন।
এতে ক্ষুব্ধ হয়ে মঙ্গল চন্দ্র তাঁর অপকর্মে বাঁধা দেওয়া যুবক বিপ্লব জলদাশ ও সোনাইয়া জলদাশকে বেদড়ক পিটিয়ে মারাত্মকভাবে জখম করেছে। এ ঘটনার পর এলাকাবাসী অভিযুক্ত মঙ্গল চন্দ্রের বিরুদ্ধে ফুঁসে উঠেছে। তাঁরা অবিলম্বে ইউনিয়ন পরিষদের গ্রাম পুলিশের চাকুরী থেকে তাঁর অপসারণের দাবি জানিয়েছেন।
তবে গ্রাম পুলিশ মঙ্গল চন্দ্র দাবী করেন, ''তিনি এসব কাজে জড়িত নয়।'' মানববন্ধন থেকে এলাকাবাসী চকরিয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. ফখরুল ইসলাম ও স্থানীয় চেয়ারম্যান ফারহানা আফরিন মুন্নার হস্তক্ষেপ কামনা করেন।