ছাত্র-জনতার গণ-অভ্যুত্থানে
শেখ হাসিনার পতনের পর আত্মগোপনে
আছেন তার অত্যন্ত ঘনিষ্ঠজন
সাত ভাই সিন্ডিকেটের প্রধান
সাবেক ধর্মমন্ত্রী ফরিদুল হক খান। তিনি
জামালপুর-২ (ইসলামপুর) আসনের
এমপি ও ধর্মমন্ত্রী ছিলেন। ছিলেন
ইসলামপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের
সভাপতিও। দীর্ঘ
সাড়ে ১৫ বছর সরকারি
অর্থ লুটপাট করে পরিবারের
সদস্যরা সম্পদের পাহাড় গড়েন।
সাবেক
ধর্মমন্ত্রী ফরিদুল হক খানের
রয়েছে সাত সাতটি ভাই। নিজে
মন্ত্রী আর ছয় ভাইকে
বিভিন্ন সেক্টরে বসিয়ে সাড়ে ১৫
বছরে অবৈধভাবে হাতিয়ে নিয়েছেন হাজার
কোটি টাকা।
২০০৮ সালের নির্বাচনে এমপি
হন সাবেক জাতীয় পার্টি
নেতা ফরিদুল হক খান। এরপর
আর পেছনে তাকাতে হয়নি
তাকে। একের
পর এক বিনা ভোটের
নির্বাচনে এমপি বনে যান
চারবার। অজ্ঞাত
টানে শেখ হাসিনার অত্যন্ত
আস্থাভাজন হয়ে ওঠেন এই
ফরিদ। মাত্র
এইচএসসি পাস হয়েও দায়িত্ব
পান ধর্ম প্রতিমন্ত্রীর।
কথিত আছে হজ্জের টাকা
কামানো মেশিন হিসেবেই ফরিদুল
হক খান দুলাল হাসিনার
আস্থাভাজন হয়ে উঠেছিলেন।
২০২৪ সালের নির্বাচনের পর
ফরিদুল হক খান ধর্মমন্ত্রণালয়ে
পূর্ণ মন্ত্রী হয়ে যান।
ধর্মমন্ত্রী ও সরকারি ক্ষমতার অপব্যবহার করে গড়ে তোলেন সাত ভাইয়ের পারিবারিক সিন্ডিকেট। এই সিন্ডিকেট পরিচালনা করতেন ছোট ভাই উপজেলা আওয়ামী লীগের অর্থ সম্পাদক মুর্শেদুল হক খান মাসুদ। কোটি কোটি টাকার ঘুষ লেনদেন হয়েছে তার মাধ্যমে।
ছোট্ট পাট ব্যবসা থেকেই সাত ভাই ও সাবেক ধর্মমন্ত্রী ফরিদুল হক খানের সংসার। এমপি-মন্ত্রী হয়ে হাতে পেয়েছেন আলাদিনের চেরাগ। টিনের ছাপরার কলার দোকান রাতারাতি হয়েছে বহুতল বাণিজ্যিক ভবন। ক্ষমতার অপব্যবহার করে যে ভবনে আনা হয় ইসলামী ব্যাংকসহ সরকারি বেসরকারি বেশ কিছু প্রতিষ্ঠান ।
হজ দুর্নীতি এবং মডেল মসজিদ নির্মাণে দুর্নীতির মাধ্যমে লুটপাট করেছেন কোটি কোটি টাকা। সাত ভাই, শ্যালক, স্ত্রী, দুই মেয়ে, মেয়ের জামাই, আত্মীয়স্বজন এবং নিজ নামে-বেনামে দেশে-বিদেশে করেছেন অবৈধ সম্পদের পাহাড়। ইসলামপুরে ধর্মমন্ত্রী ফরিদুল হক খানের ছোট মাসুম খান ও ঢাকায় সোহেল খানের মাধ্যমে গড়ে তুলেছেন কোটি কোটি টাকার সম্পদ। আর বিদেশে মেয়ে ও জামাই অস্ট্রেলিয়ায় করেছেন বিলাসবহুল গাড়ি-বাড়ি ও কোটি কোটি টাকার সম্পদ।
মাত্র ১৫ বছর আগে যে পরিবারটির একমাত্র ভরসা ছিল পাটের ব্যবসা। বর্তমানে ওই পরিবারের এক ডজনেরও বেশি সদস্য শত শত কোটি টাকার মালিক। কিভাবে এত সম্পদ হলো প্রশ্ন সচেতন মহলের ।
জানা যায়, গত হজ
মৌসুমে হজে গিয়ে কয়েক
ঘণ্টা হারিয়ে যেতেন সাবেক
ধর্মমন্ত্রী ফরিদুল হক খান।
কথিত আছে অস্ট্রেলিয়ায় মেয়ের
নিকট টাকা পাচারের জন্যই
তিনি কিছু সময়ের জন্য
আত্মগোপন করেছিলেন।
শেখ হাসিনা দেশ ছেড়ে
ভারতে পলানোর পর দুর্নীতি
দমন কমিশনের তদন্ত তালিকায় শীর্ষে
রয়েছেন এই ধর্মমন্ত্রী।
ইতোমধ্যে তার বিরুদ্ধে দেশ
ত্যাগের নিষেধাজ্ঞাও জারি করেছেন সরকার।