কুড়িগ্রামের চিলমারীতে প্রায় পাঁচ বছর ধরে ভাসমান তেল ডিপো যমুনা অয়েল কোম্পানী লিঃ ও মেঘনা পেট্রোলিয়াম লিঃ এর বার্জ দুটি জ্বালানি তেল শূন্য অবস্থায় পরে আছে। তেল না থাকায় বিপাকে পড়েছেন কয়েক লাখ ভোক্তা।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ব্রহ্মপুত্র নদের নাব্যতা সংকট দেখিয়ে দীর্ঘ সময় ধরে তেল শূন্য অবস্থায় পড়ে আছে বার্জ গুলো। অথচ এই ব্রহ্মপুত্র নদের রুট ব্যবহার করে প্রতিনিয়ত ভারত থেকে পণ্য আনা-নেয়া হচ্ছে। অপর দিকে এই রুটে চলাচল করছে ফেরি।
দায়িত্বশীল মাধ্যমে জানা গেছে, ১৯৮৯ সালে ভাসমান তেল ডিপো মেঘনা ও যমুনা কোম্পানীর দুটি ভাসমান তেল ডিপো স্থাপিত হয় চিলমারীতে। ডিপো দুটির অনুমোদিত ২২জন ডিলার রয়েছে। এদিকে এই তেল ডিপো থেকে কুড়িগ্রাম, গাইবান্ধা, জামালপুর ও লালমনিরহাট জেলার কয়েকটি উপজেলায় জ্বালানী তেল সরবরাহ হত।
২০২০ সালের (৮ জানুয়ারী) যমুনা অয়েল কোম্পানী লিঃ ও (২২ ফ্রেব্রুয়ারী) মেঘনা পেট্রোলিয়াম লিমিটেডের তেল শেষ হয়ে যাওয়ার পর থেকে অজানা কারনে ডিপো দুটিতে তেল আসা বন্ধ রয়েছে।
স্থানীয় তেল ডিলারদের সঙে কথা বলে জানা গেছে, তেলের দাম বৃদ্ধি ও ডিপো দুটি তেল শুন্য হয়ে পড়ায় পার্বতীপুর অথবা রংপুর ডিপো থেকে ১০১.৭০ টাকায় কিনে সড়কপথে তেল আনতে অতিরিক্ত পরিবহন, ঘাটতি ও লেবার খরচ প্রতি লিটারে প্রায় ২টাকা বেশী হয়।
সব মিলে ডিলারদের তেল কিনে চিলমারী পর্যন্ত আনতে প্রায় ১০৩.৭০ পড়ে। এরপর খুচরা বিক্রেতা থেকে খুচরা ক্রেতা। ফলে কৃষকদের তেল কিনতে হচ্ছে ১০৬-১১০টাকায়।
ভাসমান ডিপো দুটি উপজেলার জ্বালানী তেলের চাহিদা মিটানোর পর পাশ্ববর্তী নারায়নপুর, যাত্রাপুর, সাহেবের আলগা, রৌমারী, রাজিবপুর, সানন্দবাড়ী, জাফরগঞ্জ, কামারজানী ও উলিপুর উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় সেচ মৌসুমে ভাসমান তেল ডিপো থেকে প্রতিদিনের তেলের চাহিদা প্রায় ৭৫০ ব্যারেল বা ১লাখ ৫০হাজার লিটার এবং ব্রহ্মপুত্র নদে চালিত নৌকা, ড্রেজার মেশিন, জমি চাষের ট্রাক্টর, বিভিন্ন ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানে চালিত জেনারেটর, মাহেন্দ্র গাড়ী, নছিমন-করিমনসহ বিভিন্ন যন্ত্র চালনার জন্য প্রতিদিন অতিরিক্ত প্রায় ১শ থেকে দেড়’শ ব্যারেল বা ২০-৩০ হাজার লিটার তেলের চাহিদা রয়েছে।
এছাড়াও সম্প্রতি চরাঞ্চলে ব্যাপক ভূট্টা চাষের জন্য জমি চাষ ও সেচ মিলে প্রতিদিন প্রায় ২০-৩০হাজার লিটার তেলের চাহিদা রয়েছে।
অপরদিকে ডিপো দুটি দীর্ঘদিন ধরে বন্ধ থাকায় সেখানে দৈনিক হাজিরার ভিত্তিতে কর্মরত ১৭জন কর্মচারীসহ প্রতিদিন খেটে খাওয়া প্রায় ৩শ শ্রমিক কাজ না থাকায় প্রায় ৫বছর ধরে পরিবার পরিজন নিয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছেন।
এ ব্যাপারে যমুনা অয়েল কোম্পানী লি. এর ডিপো ইনচার্জ মো. শরিফুল ইসলাম জানান, ভাসমান ডিপোটি বিপিসি’র একটি টিম পরিদর্শন করে গেছেন। ডিপোটি স্থায়ী করনের প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে বলে জানান তিনি।
মেঘনা অয়েল কোম্পানি লি: এর ডিপো ইনচার্জ (ভারপ্রাপ্ত) শফিক আহমেদ বলেন, আমি ভারপ্রাপ্ত দায়িত্বে আছি এবিষয়ে আমি কিছু বলতে পারব না। কুড়িগ্রাম জেলা প্রশাসক নুসরাত সুলতানা জানান, ডিপো দুটি যেহেতু কৃষির সঙে জরিত অবশ্যই বিষয়টি খতিয়ে দেখব। কেন এখানে তেল আসছে না, বর্তমান অবস্থা কি।