দৈনন্দিন জীবনে অন্যতম একটি সমস্যা হলো কোষ্ঠকাঠিন্য। এ সমস্যায় পড়লে প্রয়োজনীয় সব পদক্ষেপ নেওয়া উচিত। এ সমস্যা সমাধানে ঘরোয়া কিছু পদ্ধতিও অনুসরণ করতে পারেন।কোষ্ঠকাঠিন্য এমন একটি সমস্যা, যাতে সব বয়সের মানুষজনই ভোগেন। কিছু ক্ষেত্রে এই সমস্যা বংশগত। তবে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই অপরিকল্পিত ডায়েট, অনিয়মিত খাদ্যাভ্যাসের কারণে কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা হয়ে থাকে। কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা একেকজনের একেকরকম। অনেকের এই সমস্যা ক্ষণস্থায়ী হয়। আর অনেকে দীর্ঘকালীন (ক্রনিক) সমস্যায় ভোগেন। অনেক কিছু করেও তাদের সমস্যা মেটে না। এর ফলে তাদের জীবন দুর্বিষহ হয়ে পড়ে। তবে নিয়মিত তিনটি নিয়ম মেনে চললেই কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা থেকে মুক্তি পাবেন।
১. পর্যাপ্ত পানি: ফাইবারসমৃদ্ধ খাবারের পাশাপাশি নিশ্চিত করুন প্রতিদিন ৩ লিটার পানি পাান করার অভ্যাস। দৈনন্দিন জীবনের ব্যস্ততার কারণে আমরা প্রায়শই পানি পান করার মতো গুরুত্বপূর্ণ কাজকে অবহেলা করে ফেলি। তবে যাদের কোষ্ঠকাঠিন্য রয়েছে তাদের অবশ্যই নিয়মিত ৩ লিটার পানি গ্রহণ নিশ্চিত করতে হবে। ঘরোয়া এ তিন উপায়েই মুক্তি মিলবে কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা থেকে।
২. কলা: কোষ্ঠকাঠিন্য সমস্যার সমাধানে মহাঔষধ বলতে পারেন কলাকে। কলাতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার যা কোষ্ঠ্যকাঠিন্য সমস্যা সমাধানে দারুণ কাজ করে। এতে থাকা পটাশিয়াম বৃহদান্ত্র ও ক্ষুদ্রান্ত্রের কর্মক্ষমতা বাড়িয়ে হজমশক্তিকে আরও গতিশীল করে। তাই তিনবেলা খাওয়ার পরই একটি করে কলা খাওয়ার অভ্যাস করুন।
৩. পাশাপাশি দুশ্চিন্তা বা মানসিক চাপমুক্ত জীবনযাপনের চেষ্টা করুন। যত দূর সম্ভব মল চেপে না রাখার অভ্যাস করা এবং নিয়মিত ব্যায়াম ও হাঁটাচলার অভ্যাস গড়ে তোলা। ইসবগুলের ভুসি, অ্যালোভেরা বা ঘৃতকুমারীর মতো ঘরোয়া টোটকাও কোষ্ঠকাঠিন্যের সমাধানে বেশ কাজে আসে। প্রতিদিন প্রচুর পানি ও তরল এবং যথেষ্ট আঁশযুক্ত খাবার খান। গোটা শস্য, শাকসবজি, ফলমূল যেমন বেল, পেঁপে ইত্যাদি হলো আঁশযুক্ত খাবার।
৪. কিছু কিছু ওষুধ কোষ্ঠকাঠিন্যের জন্য দায়ী (যেমন নিয়মিত আইবুপ্রোফেন জাতীয় ব্যথানাশক ওষুধ সেবন, আয়রন বা ক্যালসিয়াম বড়ি)। এসব বিষয় খেয়াল করতে হবে। কফি, পিৎজা, ফাস্ট ফুড বা পাস্তার মতো খাবার এড়িয়ে চলতে হবে। চকলেট, ভাজাপোড়া, লাল মাংস (গরু, খাসি ইত্যাদি), চিপস, প্রচুর চিনিযুক্ত বেকারি খাদ্য যেমন কেক, পেস্ট্রি কেক এবং আয়রন ক্যাপসুল, কাঁচাকলা ইত্যাদি কম খাওয়াই ভালো।
৫. এতেও উপকার না পেলে চিকিৎসকের পরামর্শ মোতাবেক ওষুধ সেবন বা ব্যবহার করা যায়। তবে এগুলো বেশি পরিমাণে বা নিয়মিত সেবন করা অনুচিত। কারণ, এতে মলদ্বারের স্বাভাবিক কার্যক্ষমতা বাধাপ্রাপ্ত হতে পারে।
৬. কলমি শাক: কলমি শাক কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে সাহায্য করে। কলমি শাকের পাতা ও কাণ্ডে পর্যাপ্ত পরিমাণে ফাইবার বা আঁশ রয়েছে। আঁশ খাদ্য হজম, পরিপাক ও বিপাক ক্রিয়ায় সহায়তা করে। তাই সপ্তাহে অন্তত তিন দিন ডায়েটে কলমি শাক রাখুন।