ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) ফজলুল হক মুসলিম হলে চোর সন্দেহে তোফাজ্জল নামে এক মানসিক ভারসাম্যহীন যুবককে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগে দায়ের করা মামলায় গ্রেপ্তার বিশ্ববিদ্যালয়টির ছয় শিক্ষার্থী স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। জবানবন্দি শেষে গ্রেফতারদের জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে।
শিক্ষার্থীরা হলেন- ফজলুল হক হল শাখা ছাত্রলীগের সাবেক উপ-বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সম্পাদক এবং পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী মো. জালাল মিয়া, মৃত্তিকা পানি ও পরিবেশ বিভাগের শিক্ষার্থী সুমন মিয়া, পুষ্টি ও খাদ্যবিজ্ঞান ইনস্টিটিউটের মো. মোত্তাকিন সাকিন, গণিত বিভাগের আহসান উল্লাহ, জিওগ্রাফির আল হসাইন সাজ্জাদ ও ওয়াজিবুল আলম।
শুক্রবার (২০ সেপ্টেম্বর) রাতে ডিএমপি মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) মুহাম্মদ তালেবুর রহমান এসব তথ্য জানান।
তিনি বলেন, তোফাজ্জল হোসেনকে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় গ্রেফতার ছয় শিক্ষার্থী ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছেন। জবানবন্দি শেষে গ্রেফতারদের জেল হাজতে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। তোফাজ্জল হত্যা মামলাটি ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ অত্যন্ত গুরুত্ব ও নিবিড়ভাবে তদন্ত করছে। ঘটনার সঙ্গে জড়িত অন্যান্য আসামিদের গ্রেফতার করে আইনের আওতায় নিয়ে আসতে পুলিশি তৎপরতা অব্যাহত রয়েছে।
এর আগে এ ঘটনায় মামলা করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের এস্টেট অফিসের সুপারভাইজার মোহাম্মদ আমানুল্লাহ।
মামলার এজাহারে মোহাম্মদ আমানুল্লাহ উল্লেখ করেন, ১৮ সেপ্টেম্বর রাত পৌনে ৮টার সময় একজন যুবক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফজলুল হক মুসলিম হলের গেটে সন্দেহজনকভাবে ঘোরাফেরা করছিলেন। এ সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু ছাত্র তাকে আটক করে প্রথমে ফজলুল হক মুসলিম হলের মূল ভবনের গেস্ট রুমে নিয়ে যান। মোবাইল চুরির অভিযোগে তারা ওই যুবককে এলোপাতাড়ি চড়-থাপ্পড় ও কিলঘুসি মারেন।
জিজ্ঞাসাবাদে ওই যুবক তার নাম তোফাজ্জল বলে জানান। পরে তিনি মানসিক রোগী বুঝতে পেরে তাকে হলের ক্যান্টিনে নিয়ে খাবার খাওয়ান। এরপর তাকে হলের দক্ষিণ ভবনের গেস্ট রুমে নিয়ে জানালার সঙ্গে হাত বেঁধে স্ট্যাম্প, হকিস্টিক ও লাঠি দিয়ে উচ্ছৃঙ্খল কিছু ছাত্র বেধড়ক মারধর করলে তিনি অচেতন হয়ে পড়েন। গুরুতর আহত অবস্থায় রাত ১টার দিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন।