রাজশাহীর সাহেববাজার বড় মসজিদের সামনে সকাল ১০টা থেকে সমবেত হয়ে সমাবেশ শুরু করেছিলেন স্থানীয় বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা। কিন্তু বেলা ১১টার দিকে পূর্বনির্ধারিত কর্মসূচি অনুযায়ী রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শিক্ষার্থীরা বড় মসজিদ সংলগ্ন জিরোপয়েন্টে সমাবেশ শুরু করলে বিএনপির সমাবেশ পন্ড হয়ে যায়।
এসময় প্রায় ১ ঘন্টা বিএনটির নেতাকর্মীরা অপেক্ষা শেষে নগরীর সোনাদীঘির মোড়ে সমাবেশ করার সিদ্ধান্ত নিয়ে অবস্থান ত্যাগ করে। বৃহস্পতিবার (১৫ আগস্ট) দুপুর ১২টার আগেই শিক্ষার্থীদের ‘জিরো ফ্যাসিজম রোডমার্চ টু জিরোপয়েন্ট’ কর্মসূচি শেষে সাহেববাজার জিরোপয়েন্টে জনসভা শুরু হয়।
এর আগে মহানগরীর তালাইমারি, রেলগেট ও সিএন্ডবি মোড় থেকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্যানারে সকাল সাড়ে ১০টায় শিক্ষার্থীদের মিছিল শুরু হয়। বেলা ১১টার মধ্যে খন্ড খন্ড মিছিল সাহেববাজার জিরোপয়েন্টে এসে জনসভায় মিলিত হয়।
রাবি শিক্ষার্থী মোজাহিদ শুভ'র সঞ্চালনায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের জনসভায় রেসিডেন্সিয়াল কলেজের অধ্যক্ষ মামুন হোসেন বুলবুল, রাবির আরবি বিভাগের সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যাপক নিজাম উদ্দিন, রাবি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক গোলাম কিবরিয়া চৌধুরী মিশু এবং রাবি শাখার সমন্বয়ক মেহেদী সজিব, মেহেদী হাসান মুন্না, মোহাম্মদ মাসুদ, সালাউদ্দিন আম্মার ও ফজলে রাব্বি মোহাম্মদ ফাহিম রেজা, সাংবাদিক রাশেদ রাজন সহ রাজশাহী জেলার সমন্বয়কগণ বক্তব্য দেন।
সভায় রেসিডেন্সিয়াল কলেজের অধ্যক্ষ মামুন হোসেন বুলবুল বলেন, ‘শেখ হাসিনার সরকার আমার প্রিয় সন্তানদের হত্যা করেছে। একদফার আন্দোলনের মাধ্যমে ছাত্রজনতা শেখ হাসিনার পতন করেছে। তোমাদের অভিভাবক হয়ে আমি গর্বিত।
যতদিন হাসিনার পেতাত্মারা এই দেশে থাকবে ততদিন আমাদের আন্দোলন অব্যাহত থাকবে। শেখ হাসিনার সরকার আমাদের পরাধীন জাতিতে পরিণত করেছিল। আজ গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে ২০২৪ এর স্বাধীনতা অর্জিত হয়েছে। এবার দেশ গড়ার জন্য তোমাদের প্রস্তুতি নিতে হবে।’
রাবির আরবি বিভাগের সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যাপক নিজাম উদ্দিন বলেন, ‘এদেশের সংবিধাকে ধ্বংস করে দেওয়া হয়েছিল। মানুষকে জিম্মি করে রাখা হয়েছিল। আজ এই জায়গায় দাড়িয়ে এই বক্তব্য দেওয়ার সাহস কারও ছিল না। ছাত্রজনতার আন্দোলনের মাধ্যমে এই দেশ স্বাধীন হয়েছে।’
সভায় সমন্বয়ক ফজলে রাব্বি মোহাম্মদ ফাহিম রেজা বলেন, শেখ মুজিব ১৯৭২ সাল পর্যন্ত ছিলেন বঙ্গবন্ধু। ৭২ এরপর থেকে শেখ মুজিব ছিল স্বৈরাচারী। স্বৈরাচারী শেখ হাসিনা আমাদের ভাইদের যেভাবে নৃশংসভাবে হত্যা করেছে, সেই শোকে আমরা ১৯৭৫ সালের (১৫ আগস্ট) পালন করতে পারি না।
এই দিবসকে আমরা বয়কট করলাম। এই স্বৈরাচার বিশ্ববিদ্যালয় গুলোকে অস্ত্রাগার বানিয়েছে। অতিদ্রুত বিশেষ ট্রাইবুনালের মাধ্যমে আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করতে হবে। এই গুলোসমূলে উৎপাটন না হওয়া পর্যন্ত আমাদের আন্দোলন চলবে।