বগুড়ায় ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে জেলার দুই শতাধিক ছেলে মেয়ে শিক্ষার্থী। শহরে কোন ট্রাফিক পুলিশ না থাকায় মঙ্গলবার থেকে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সড়কে এসব শিক্ষার্থী যানজট নিরসনে দায়িত্ব পালন করছে।
তারা শুধু যানজট নিরাসনেই কাজ করছে না, পথচারীদের রাস্তা পারাপারের নিয়মনীতি মেনে চলার জন্য অনুরোধ করছে। শিক্ষার্থীদের এমন মহৎ কাজকে সাধুবাদ জানিয়েছেন শহরবাসী।
জানা গেছে, বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে সরকার প্রধান পদত্যাগ করে দেশ ছাড়ার পর বগুড়ায় কোন পুলিশ সদস্য কাজে যোগদান করেনি। মঙ্গলবার থেকে বগুড়ায় সব কিছু স্বাভাবিক হতে শুরু করেছে। শহরে মানুষ আসা ও দোকানপাট খোলা এবং যান চলাচল শুরু করেছে।
কিন্তু ট্রাফিক বিভাগের লোকবল রাস্তায় না থাকায় বগুড়া শহরের প্রাণকেন্দ্র সাতমাথা, বড়গোলা, থানা মোড়, ইয়াকুবিয়া স্কুল মোড়সহ বিভিন্ন সড়কে দলবেঁধে জেলার বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের দুই শতাধিক শিক্ষার্থী ট্রাফিক ব্যবস্থা নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে।
গতকাল মঙ্গলবারও সকাল থেকে রাত পর্যন্ত এসব দায়িত্ব পালন করছে এবং আজ বুধবারও সকাল থেকে ট্রাফিকের কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। দায়িত্ব পালনকালে এসব শিক্ষার্থীরা রাস্তায় দাঁড়িয়ে পানি ও নাস্তা করতে দেখা গেছে। তারা যার যেখানে দায়িত্ব তা যথাযথ ভাবে নিজ থেকেই পালন করে চলছে।
ট্রাফিকের দায়িত্ব পালনকারী বগুড়ার অনার্স ফাইনাল পরীক্ষার্থী রুকাইয়া তাসনিম জানান, ৭১ বা ৫২ দেখেনি, দেখেছি ২০২৪। আন্দোলনে আমার ভাইয়েরা শহীদ হওয়ার পর। প্রতিরোধ গড়ার জন্য আমরা মাঠে নেমেছি, ভলেন্টিয়ার ভাই হিসেবে বোন হিসেবে মাঠে কাজ করছি। অসম্ভব সুন্তর লাগছে, স্বপ্নেও ভাবতে পারিনি যে দেশের জন্য এভাবে কাজ করতে পারবো।
তিনি আরও বলেন, আমাদেরকে তো নষ্ট জেনারেশন রাজাকার গণ্য করেছিল। রাজাকারের নাতি পতি বলেছিল। রাজাকারের নাতিপতি কি এই স্বাধীন দেশে এমনভাবে কাজ করতে পারে? পারে না!
আমি প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে এবং উদ্ধুদ্ধ হয়ে মাঠে নেমেছি কাজ করার জন্য। আমার দেশ আমার স্বাধীন রাষ্ট্র। আমরা জানি স্বাধীনতা অর্জন করার চেয়ে রক্ষা করা কঠিন। আমরা সবাই ছাত্র সমাজ আপনাদের পাশে নেমেছি। দোয়া রাখবেন এই দেশ সুন্দর, সাবলীল রাষ্ট্র গড়ে তোলার জন্য।
ট্রাফিকের কাজ করছেন আরেক শিক্ষার্থী বগুড়া শাহ সুলতান কলেজের ম্যানেজমেন্ট বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র মোস্তাসিন বিল্লাহ জানান, দেশের অধিকাংশ জায়গায় ট্রাফিকগুরো সংকটে। দেশে পুলিশ বাহিনী ট্রাফিক ব্যবস্থা নিয়ন্ত্রণ করত।
এখন ট্রাফিক সদস্য না থাকায় আমরা শিক্ষার্থীরা নিজ থেকে এসব দায়িত্ব পালনে আগ্রহী হয়েছি। সকাল থেকে শহরের গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে দুই শতাধিক ছেলে মেয়ে শিক্ষার্থীরা দল বেধে ট্রাফিক ব্যবস্থা নিয়ন্ত্রণ করে যান চলাচল স্বাভাবিক রাখা হচ্ছে।
তিনি আরও জানান, আমাদেরকে সকলে সহযোগিতা করবেন। পথচারীরা ফুটপাত দিয়ে চলাচল করবেন এবং যান নিয়ে রাস্তায় নিয়ম নীতি মেনে চলার জন্য অনুরোধ করছি।
শহরে চলাচলকারী পথচারী শহরের ফুলতলার বাসিন্দা সাবেক সেনা সদস্য আবু তালেব ছেলে মেয়েরা শৃঙ্খলার কাজ করছে অনেক ভালো কাজ। এখন ট্রাফিক নেই, সেই কাজ শিক্ষার্থী করছে। এসব কাজ নিসন্দেহে মহৎ কাজ। আমি আশা করছি দেশে তাড়াতাড়িই আইন শৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে আসবে এবং দেশটি একটি সুন্দর দেশে পরিণত হবে।