বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনে ছাত্র জনতার বিজয়ের মধ্য দিয়ে হাসিনা সরকারের পতন ঘটেছে। জাতির এই ক্ষণকে আনন্দ উল্লাস ও বিক্ষোভের মধ্য দিয়ে সম্মিলিত ভাবে উদযাপন করেছে চলচ্চিত্র শিল্পী, নির্মাতা, কলাকুশলী ও চলচ্চিত্র সাংবাদিকরা।
মঙ্গলবার (৬ আগস্ট) সকালে বিএফডিসি প্রাঙ্গনে অনুষ্ঠিত এই আয়োজনে বক্তৃতা করেন চলচ্চিত্র নির্মাতা এ জে রানা, বদিউল আলম খোকন, আবুল কালাম আজাদ, খিজির হায়াত খান, গোলাম মোস্তফা শিমুল, ফিল্ম ক্লাবের প্রেসিডেন্ট শামসুল আলম, চিত্রগ্রাহক আসাদুজ্জামান মজনু, চিত্র সম্পাদক একরামুল হক, ফাইট ডিরেক্টর আরমান, চিত্রনায়ক মেহেদী, এফডিসির কর্মচারী সমিতির সভাপতি হান্নান, নৃত্য পরিচালক সাইফুল ইসলাম, অভিনেতা বিলাস খান, সিনিয়র সাংবাদিক ইমরুল শাহেদ, আহমেদ তেপান্তর, মোস্তফা মতিহার, নিথর মাহবুব, রঞ্জু সরকার, সুরকার মুরাদ নূর প্রমুখ।
এতে সংহতি প্রকাশ করেন প্রদর্শক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আওলাদ হোসেন উজ্জল, চিত্রনায়ক মাসুদ পারভেজ, চিত্রনায়িকা মুক্তি, আইরিন সুলতানা প্রমুখ।
আহমেদ তেপান্তর বলেন, দীর্ঘ ১৫ বছরের জুলুম,গুম, খুন ও ফ্যাসিবাদের মধ্য দিয়ে জাতির জীবনে অন্ধকার নেমে এসেছিলো। ফ্যাসিস্ট সরকারের দুঃশাসনে সারা বাংলাদেশ কারাগারে পরিণত হয়েছিলো। পরাধীনতার শৃঙ্খল থেকে মুক্ত হতে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাথে গোটা জাতি ঐক্যবদ্ধ হয়ে এক সাগর রক্তের বিনিময়ে সৈরাচারের পতন ঘটিয়েছে।
এ পতন ছিলো গোটা জাতির জন্য কাঙ্খিত। সৈরাচারের পতনের মধ্য দিয়ে এ জাতি পরাধীনতার গ্লানি ও আওয়ামী ফ্যাসিবাদ থেকে মুক্ত হলো। ছাত্র জনতার এই বিজয় গোটা জাতির বিজয়। জাতির ক্রান্তিলগ্নে ছাত্র জনতা এগিয়ে আসাতে তারা আজ গোটা জাতির প্রশংসায় ভাসছে।
জাতিকে স্বাধীনতার নতুন সূর্য এনে দেওয়াতে ছাত্র জনতার কাছে আমরা ঋনী। ছাত্র জনতার আত্মবিসর্জন ও এক সাগর রক্তের বিনিময়ে অর্জিত এই স্বাধীনতা যেকোনো মূল্যে আমাদেরকে ধরে রাখতে হবে। পাশাপাশি এই আন্দোলনে যে সকল সাংবাদিক ভাইয়েরা হুমকি ও শারীরকি নির্যাতনের শিকার হয়েছেন তাদেরও সেসব হুমকিদাদের চিহ্নিত করে বিচার দাবি করেছেন তিনি।
বদিউল আলম খোকন বলেন, সৈরাচার পতনে রাজপথে ছাত্র জনতা যে সাহসী ভূমিকা রেখেছে তাতে আমরা নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণের স্বপ্ন দেখছি। বাংলাদেশের চলচ্চিত্রের পক্ষ থেকে সংগ্রামী এ বীরদের অভিনন্দন ও কৃতজ্ঞতা জানাই। সেই সাথে আন্দোলনে প্রাণ বিসর্জন দেওয়া সকল শহিদদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করছি।
সকল শহিদ ও ছাত্র নেতাদের ধন্যবাদ জানিয়ে শিবা সানু বলেন, এখন আমাদের সব সেক্টরে সংস্কার করতে হবে। সেন্সর বোর্ড, জুরিবোর্ড, শিল্পকলা একাডেমিসহ সকল গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠান থেকে সৈরাচারের দোসরদের অপসারণ করে সৎ ও যোগ্য ব্যক্তিদের পদায়ন করতে হবে।
খিজির হায়াত খান বলেন, আমাদের বিজয় যেন কেউ ছিনিয়ে নিতে না পারে সে বিষয়ে আমাদেরকে সজাগ ও সচেতন থাকতে হবে। সবাইকে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কাজ করতে হবে। আর এই কাজ তখনই সম্ভব হবে যখন সব সেক্টর থেকে আওয়ামী দালালদের বিদায় করা যাবে।
এর আগে অনুষ্ঠানের শুরুতেই বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে প্রাণ বিসর্জন দেওয়া সকল শহিদদের স্মরণে দাঁড়িয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয় ও তাদের বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনা করা হয়। পরে সকলের দাবির মুখে এফডিসির সকল সংগঠনের কার্যালয় থেকে শেখ মুজিব ও তার কন্যা সৈরাচার শেখ হাসিনার ছবি সরিয়ে নেওয়া হয়। এসময় সবাই আনন্দ উল্লাস ও উন্মাদনায় মেতে উঠেন।