বগুড়ায় প্রায় প্রতিদিনই সংঘঠিত হচ্ছে হত্যাকাণ্ড। এ শহর যেনো এখন খুনের নগরীতে পরিনত হয়েছে। চলতি মাসে দুটি জোড়া খুনসহ মোট ৯ টি হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয়েছে। এত সব খুনের খবরে বগুড়াবাসী শংকিত হয়ে পড়েছেন। সর্বশেষ ঈদের দিন রাতে একই এলাকায় দুই যুবককে নির্মমভাবে হত্যার ৪ দিন পর আবারও আরেকজনকে হত্যা করা হয়েছে। এত হত্যাকাণ্ড আগে কখনোই ঘটেনি। একের পর এক হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হওয়ায় এসব তথ্য জানাতেও গরিমশি করছেন পুলিশ কর্মকর্তাগণ।
শনিবার (২২ জুন) তুচ্ছ ঘটনায় ড্রেনের কাদায় মাথা চুবিয়ে ইউনুস আলীকে হত্যা করা হয়েছে। ওইদিন রাত আনুমানিক ৯টায় বগুড়া সদর উপজেলার শেখেরকোলা ইউনিয়নের বালা কৈগাড়ী স্কুল পাড়ার পিতা মৃত রিয়াজ উদ্দিনের ছেলে ইউনুস আলী (৬৩)৷ এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন বগুড়া সদর থানার পরিদর্শক শাহিনুজ্জামান। এ হত্যাকাণ্ডে কাউকে আটক করতে পারেনি পুলিশ।
নিহতের ছেলে গোলাম রসুল বলেন, বৃহস্পতিবার (২০ জুন) আমার বড় ভাই শাহীনের সাথে প্রতিবেশী ওহাব আলীর স্ত্রীর সাথে রাস্তায় ধাক্কা লাগে। ওহাব আলীর স্ত্রী গায়ে হাত দেওয়ার কথা তার পরিবারকে জানায়। উক্ত ঘটনাকে কেন্দ্র করে বিকালে ওহাব আলীসহ আরও কয়েকজন মিলে আমার বড় ভাই শাহীনকে মারধর করে। সন্ধ্যায় আমি ও আমার বাবা ইউনুস আলী এ ঘটনার প্রতিবাদ করলে তারা আমাকে মারধর করে সবাই মিলে আঁকড়ে ধরে রাখে। আমার বাবাকেও তারা মারধর করে ও ড্রেনের কাদার ভিতরে মাথা চুবিয়ে হত্যা করে। এ ঘটনায় জড়িত ওহাব আলীসহ তার পরিবারের সবাই পালিয়ে গেছেন।
ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (তদন্ত) শাহীনুজ্জামান বলেন, ইউনুস আলীর মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহ বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। নিহতের গলার নিচে আঘাতের চিহ্ন আছে। প্রাথমিকভাবে জানা গেছে প্রতিবেশী ওহাব আলীর সাথে কোন এক ঝামেলায় এ ঘটনা ঘটেছে। আমরা ঘটনাটি গুরুত্ব সহকারে তদন্ত করছি। যারা জড়িত তাদের দ্রুত আইনের আওতায় আনা হবে।
এর আগে বগুড়ার বনানীতে আবাসিক হোটেলে স্ত্রী সন্তানকে গলাকেটে হত্যা করে স্বামী। এরপর একই রাতে সন্ত্রাসী ব্রাজিল ও ইজিবাইক ছিনতাই করে চালককে নিমমভাবে হত্যা করে। এরপর সারিয়াকান্দিতে এক স্কুল ছাত্রকে মারপিটে হত্যা করেছে। তারপর জেলার শিবগঞ্জে একজনকে মারপিটে হত্যা করেছে। ঈদের রাতে শহরের নিশিন্দারা এলাকায় দুই যুবককে গুলি ও ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করেছে। এ ঘটনায় গুলিবিদ্ধ একজন হাসপাতালে যন্ত্রনা কাতরাচ্ছে। এরপরও গত রাতে ইউনুছ আলী হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয়েছে।
শনিবার রাতে ইউনুস আলী হত্যাকান্ডের তথ্য নিশ্চিত করতে বগুড়া সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি ওয়ালিউল্লাহ সাইহানের সরকারি মোবাইলে যোগাযোগ করা হলে তিনি না বলে পরিদর্শক তদন্তের সাথে যোগাযোগ করতে বলেন। ওসি তদন্ত শাহিনুজ্জামান সরকারি মোবাইলে হোয়াইটঅ্যাপে তথ্য জানানোর জন্য অনুরোধ করা হলেও তিনি কোন মন্তব্য করেননি। এই শহরে একের পর এক হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হওয়ায় পুলিশ কর্মকর্তারাও তথ্য দিতে হিমশিম খাচ্ছেন।